PSC Clerk Previous Year Bengali Reporting ( 1998-2009)

PSC Clerk Previous Year Bengali Reporting ( 1998-2009)




1. সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য নীচের বিষয়ের উপর একটি প্রতিবেদন লিখুন - সুন্দরবন অঞ্চলে বাঘের জঙ্গল ছেড়ে মাঝেমধ্যেই লোকালয়ে আগমন/প্রবেশ।       ( PSC Clerk - 2009)


             বাঘ ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে,জনজীবন বিপয্যস্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝড়খালি, ২রা আগস্ট, ২০১৯ : গতকাল বেলা ১১ টা নাগাদ,একদল বাঘ গোসাবার সজনেখালী গ্রামে ঢুকে পড়ে,গ্রামবাসীরা প্রথম দিকে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লেও পরে লাঠি,দা,কুড়ুল নিয়ে বেরিয়ে পরে তাদের কে তাড়ানোর জন্য, কিছু বাঘ পালিয়ে গেলেও,একটি বাঘকে গ্রামবাসীরা পিটিয়ে হত্যা করে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, সুন্দরবন থেকে প্রায়ই বাঘ তাদের লোকালয়ে ঢুকে পড়ে,এর আগে বেশ কিছু গ্রামবাসীর প্রাণও গেছে। আজ বিকাল ৪ টে নাগাদ একটি বাঘ কে পিটিয়ে তারা হত্যা করেন।
                 বাঘ পিটিয়ে মারার খবর প্রচার হতেই গোসাবা থানার পুলিশ এবং বনবিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বনবিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন "লোকালয় টি সুন্দরবনের সংলগ্ন এলাকায় হওয়ায় মাঝেমধ্যেই খাবারের খোঁজে বাঘেরা এখানে হানা দেয়"।
                  প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কারণে দিশেহারা সমগ্র ব্যাঘ্রপ্রজাতি ,তাই কি এত হারে তারা লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে ! ব্যাঘ্র সংরক্ষনে দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ন্যাশনাল টাইগার কনজার্ভেশন অথরিটি অর্থাৎ এনটিসিএ-এর বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন 'লোকালয়ে বাঘের প্রবেশের অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, জলোচ্ছ্বাসের কারণ টাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যায় না"। 
                     বাঘ বিশারদ সুনঞ্জন গুপ্ত বলেছেন "প্রবল জলোচ্ছ্বাসের ফলে সুন্দরবনের বাদাবন অনেকটা নষ্ট হয়ে গেছে,আর সেই সঙ্গে কমেছে তৃণভোজী প্রাণীদের আনাগোনা আর তাই খিদের জ্বালায় বাঘেরা হানা দিচ্ছে লোকালয়ে"। 
                      অন্যদিকে আরো একজন বাঘ বিশারদ সুবীর নাইয়া জানিয়েছেন "বাঘেরা প্রায় 20-25 কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে নিজস্ব এলাকা বা টেরিটরি গড়ে তোলে, সুন্দরবন ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসায় বাঘেদের প্রজননে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব দেখা দিচ্ছে,বাঘদের প্রজননে সমস্যা হওয়ায় তারা লোকালয়ের মানুষদের উপর আক্রমণ করছে"। 
                    এ ব্যাপারে বনবিভাগের সাথে কথা হলে তারা জানিয়েছেন এই সমস্যার কথা তারা ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে জানিয়েছেন,তারা আশাবাদী খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান আসবে বলে। আর ততদিন সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রাম গুলিকে সতর্ক করা হয়েছে,বাঘেদের কোনো হদিশ পেলে সত্তর বনবিভাগে বা লোকাল থানায় খবর দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। 

2. ক্রমাগত অবরোধে জনজীবন বিপয্যস্ত - এই বিষয় নিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযোগী একটি প্রতিবেদন রচনা করো।    (PSC Clerk - 2007)


ক্রমাগত পথ অবরোধের কবলে স্বাভাবিক জনজীবন, ছন্দহীন প্রাত্যহিক জীবন


নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ৩ রা জুলাই, ২০১৯ : এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একাংশের আন্দোলন এবং পথ অবরোধের জেরে চরম ভোগান্তির শিকার সাধারণ মানুষ। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পথে নামলো একদল পড়ুয়া, যাদবপুরের 8b বাসস্ট্যান্ড এর কাছে তারা পথ অবরোধ করে। মেন রোডে এভাবে অবরোধ করায় অনেকটা জায়গা জুড়ে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। এদিন পড়ুয়ারা সকালের দিকে প্রথমে মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ জানায়,তারপর বেলার দিকে রাস্তার মাঝে বসে পথ অবরোধ করে। যারা নিত্যযাত্রী রয়েছেন তাদের চরম দুর্ভোগের স্বীকার হতে হয়, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সও ছাড় পায় নি এই অবরোধ থেকে। 
                      ছাত্র ছাত্রীরা পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যতক্ষন না উপাচার্য নিজে হাতে পদত্যাগ পত্র লিখে জমা দিচ্ছেন ততক্ষণ এই অবরোধ চলবে। এর কিছুদিন আগে এক ছাত্রীর সাথে একজন অধ্যাপকের দুর্ব্যবহারের কারণে বিক্ষোভ হয়েছিল,রাস্তাও অবরোধ হয়েছিল যতক্ষণ না ওই অধ্যাপক ক্ষমা চেয়েছিলেন। 
                    প্রায়শই এমন পথ অবরোধে ক্ষতি হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। অফিস টাইমে বেরিয়ে কেউ নিজের অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারছেন না। এদিন কিছু ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষাও ছিল কিন্তু তাদের কে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হয় নি। যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়লে পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ উভয়ই ব্যাহত হয়,ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় লাফিয়ে লাফিয়ে। এবং শেষমেশ দেশের অর্থনীতি তথা সাধারণ মানুষের জীবনে চরম নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। 
                      অবরোধ সবসময় কাজকর্ম ব্যাহত করে,জনজীবনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। অনেকসময় অবরোধ হতে হতে দাঙ্গা লেগে যায়,গাড়ি ভাঙচুর হয়, গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়, কোনো দোষীকে বা অপরাধীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য এই অবরোধ হলেও তারা বহাল তবিয়াতে থাকেন আর শাস্তি ভোগ করেন সাধারণ মানুষ। পথ চলতি মানুষরাও অনেকসময় এই দাঙ্গায় আহত হন,কিংবা তাদের প্রিয়জন কে ঠিকসময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন না। অবরোধ স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এই প্রভাব থাকে সুদূর প্রসারী। 
                     যাদবপুরের উপাচার্যের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানিয়েছেন যে তিনি ছাত্রদের সাথে আলোচনায় দ্রুত বসতে চান,কিন্তু ছাত্ররা রাজি নয়।তিনি এব্যাপারে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি করেছেন,এখন তাঁরই উত্তর পাওয়ার অপেক্ষা। 

3. সন্ত্রাসবাদ আজকের পৃথিবীতে একটি জ্বলন্ত সমস্যা - এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।       (PSC Clerk - 2004)


     সন্ত্রাসবাদ বর্তমান পৃথিবীর জ্বলন্ত সমস্যা


নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা , ২ রা আগস্ট, ২০১৯ : আজ গোটা বিশ্ব এমন এক ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন যার সমাধান কি কেউ জানে না। সন্ত্রাসবাদ ঘন কালো মেঘের মত ভারত সহ বহু দেশের আকাশে বিরাজমান। সন্ত্রাসবাদের প্রধান লক্ষ্য নিজেদের পরিচয় গোপন করে ব্যক্তিগর ভাবে কিংবা সম্মিলিত ভাবে হিংসা ছড়ানো, কোনো এক মানুষের আদেশ চোখ বুজিয়ে পালন করা তাতে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন হলেও কারুর কিছু যায় আসে না। 
            আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ তত্ত্বের উদ্ভাবক সৌদি আরবের মহম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহাব। তিনি তার রাজনৈতিক বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কট্টর ধর্মীয় মতবাদের বিস্তার ঘটান আর বেশ কিছু তরুণ দের কে বোঝান কার্যকলাপের সাথে যুক্ত হতে। এছাড়া লাদেন, জাওয়াহিরিসহ মোল্লা ওমরদের কথাও ভুলে গেলে চলবে না। সারা বিশ্ব এদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে সন্ত্রস্ত। সবচেয়ে বেশি হামলা এবং সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর হার দেখা যায় ইরাক,আফগানিস্তান,পাকিস্তান,নায়রমজেরিয়া এবং সিরিয়া তে। সবচেয়ে বেশি হামলার শিকার ভারত,সোমালিয়া,থাইল্যান্ড,ইয়েমেন প্রভৃতি। শুধুমাত্র ২০১৭ সালে বিশ্বজুড়ে ২৬০০০ এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
                সাউথ এশিয়ান টেরর পোর্টরাল ঘোষণা করেছর ১৭০ টিরও বেশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নিজেদের নাশকতার ছক কষে চলেছে। কখন কোন দেশ যে ক্ষতিগ্রস্ত হবে কেউ জানে না। ভারতে সন্ত্রাসবাদে পূর্ণ সমর্থন রয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের। বর্ডার অধ্যুষিত জায়গা গুলো যেমন রাজস্থান,পাঞ্জাব, জম্মু কাশ্মীর প্রভৃতি জায়গা গুলিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ সবসময় পরিলক্ষিত হয়, কখনো কখনো সংঘর্ষে ভারতীয় সৈন্যরা অকালে মৃত্যু বরন করছে। সন্ত্রাসবাদ গ্রাম বা শহর কাউকেই ছাড়ে না, তাদের কার্যকলাপে কেউ হারায় তাদের প্রিয়জনকে ,কেউ হারায় নিজের বাসস্থান। 
                    সামাজিক হতাশা কখনও কখনও সন্ত্রাসবাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইতিহাস সাক্ষী আছে তরুণ যুবক যুবতীরা বেশি এই সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত তাই তাদের এই হতাশার, দলে যোগ দেওয়ার কারণ গুলোকে খুঁজে বের করতে হবে,সেই সঙ্গে তাদের মাথায় যিনি আছেন। যিনি তাদের কে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বুঝিয়ে সব কিছু ভুলিয়ে মানুষের ক্ষতিসাধনের জন্য পাঠান। এই সমস্যার সমাধান খোঁজা মোটেই সহজ ব্যাপার নয়। বিশ্বজুড়ে আজ সন্ত্রাসবাদের প্রতিরোধ ও প্রতিকার এর উপায় খোঁজা নিয়ে সকলে ব্যস্ত। শুধু আইন বের করলেই হবে না, আইনকে সঠিক ভাবে বাস্তবায়িত করতে হবে। ধর্মীয় মতবাদের অপব্যাখ্যা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ধর্মকে অপব্যবহার করে সন্ত্রাসবাদের বীজ বপন রুখতে হলে এই পদক্ষেপ টি খুব দরকার। 
                   এখন বিশ্বায়নের যুগ, কোনো একটা দেশ কখনোই সন্ত্রাসবাদ কে মেটাতে পারবে না। যুগপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা, দেশে দেশে সম্প্রীতি সহযোগিতার মধ্যে দিয়েই সন্ত্রাসবাদ কে একেবারে গোড়া থেকে নির্মূল করা সম্ভব। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে কোনো একটা দেশ যেন এই ব্যাপারটা কে প্রশ্রয় না দেয়,তবে কিন্তু অদূর ভবিষ্যতে সেই দেশকেও এর অভিশাপের কবলে পড়তে হবে। 


4. সম্প্রতি দেখা যায় কোথাও খাদ্যাভাবে মানুষের মৃত্যু ঘটছে আবার কোথাও গুদামে শস্য নষ্ট হচ্ছে - এ সম্পর্কে সংবাদপত্রের জন্য একটি প্রতিবেদন লেখো           (PSC Clerk - 2003)


         অনাহারে বিপর্যয়ের মুখে ভারতের বিপুল খাদ্য শস্য


নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ : অনাহারে মৃত্যু ঘটলো এবার খাস কলকাতায়। কলকাতার গড়িয়া চত্বর এলাকায় খেতে না পেয়ে মারা গেল পাঁচজন শিশু। তাদের পরিবার আদতে পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। লোকাল থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়, রিপোর্টে স্পষ্ট জানা গেছে দীর্ঘদিন ধরেই অপুষ্টিতে ভুগছিল এই পাঁচ শিশু, বিগত এক সপ্তাহ ধরে কোনও খাবারই জোটেনি তাদের। 
                 এই রাজ্যে অনাহারে মৃত্যু কোনো নতুন ঘটনা নয়, এর আগে জলপাইগুড়ির বেশ কিছু শ্রমিক অনাহারে মারা গিয়েছিল আর তা নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি খুব উত্তাল। কিন্তু আজও চিত্র টা পাল্টায় নি। 
                   গোটা বিশ্বে অনাহারে অর্ধাহারে মৃত্যুর হার সব চেয়ে বেশি। কত শত মানুষ আজও দুবেলা ঠিক মত খেতে পায় না, অপুষ্টির অন্ধকারে কোটি কোটি মানুষ নিমজ্জিত রয়েছে, শিশু থেকে বৃদ্ধ কেউই ছাড় নেই।  বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে অবাক করে দেওয়া তথ্য - বিশ্বের মোট ৯০ কোটি মানুষ ক্ষুধার্ত। আর এই সংখ্যার এত তৃতীয়াংশ মানুষ ভারতেরই বাসিন্দা। দেশের বস্তি এলাকার মোট ২০ কোটি মানুষ প্রতিরাতে কিছু না খেয়েই ঘুমাতে যায়, আর বাকিরা ডাস্টবিনে পরে থাকা খাবার খেয়ে যাহোক করে দিন কাটায়। অন্যদিকে প্রতি বছর ভারতের উৎপাদিত খাবারের ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নষ্ট হয়। বিয়ে বাড়ি বা কোনো অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্না করা খাবারের 20% নষ্ট হয়। 
                   বিশ্বের একটি সূচী আছে যাকে বলে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ,এই সূচী অনুযায়ী ভারতের স্থান ১১৭ টি দেশের মধ্যে ১০২ নম্বরে। রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের ১৭% মানুষ কখনো পুষ্টিকর খাবার মুখেই তোলে নি। কিন্তু অন্যদিকে দুধ,সবজি,ফল অনেক বেশি পরিমাণে নষ্ট হয়। দুগ্ধ উৎপাদনে ভারত প্রথম স্থানে,অথচ এই দেশের ৩৫% মানুষ অভুক্ত পেট নিয়ে জীবনের কঠিনতম সময় কাটাচ্ছে। 
                  বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষন করে এটা বলাই যায় খাদ্যাভাবের প্রধান কারণ জনসংখ্যা বা উৎপাদন সমস্যা নয়, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার এবং সঠিক বন্টনের অভাব আজ ভারতকে এই সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী শস্যের গুদামেই প্রতি বছর টন টন চাল গম নষ্ট হয় অপর্যাপ্ত জায়গা এবং রাখার পরিকাঠামোর অভাবে। অবস্থা ভয়াবহ,কিন্তু পরিকাঠামো তৈরির উদ্যোগ কবে নেওয়া হবে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
                    এর আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল গুদামে খাদ্যশস্য নষ্ট না করে সেটা কে বিপিএল তালিকাভুক্ত মানুষের মধ্যে বিলি করে দিতে । কিন্তু উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। তাই সরকার যদি উৎপাদিত খাদ্য শস্যের সংরক্ষণ ,মজুত এবং পরিকাঠামোযুক্ত গণবণ্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলে তবে এই সমস্যার অনেকটাই সুরাহা করা যেতে পারে। 

5. পরিবেশ দূষণের বৈচিত্র্য,ব্যাপকতা ও পরিণাম সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে সক্ষেপে একটি প্রতিবেদন লেখো       (PSC Clerk - 2002)


      পরিবেশ দূষণ বর্তমানের এক জ্বলন্ত সমস্যা


নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১৫ ই আগস্ট, ২০১৯ : প্রকৃতির অন্যতম সৃষ্টি মানুষ আর এই মানুষই তার সৃষ্টিকর্তা কে কলুষিত করছে বিভিন্ন ভাবে। আকাশ,বাতাস,মাটি, জল সব কিছুকে নিজের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিষাক্ত করে তুলছে। একটু ভালো ভাবে থাকতে গিয়ে নিজের অজান্তেই পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। পরিবেশ দূষণের জন্য মানুষের সৃষ্টি করা কারণ গুলোই সবচেয়ে বেশি দায়ী। কিছু কারণ যদি উল্লেখ করতে হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বিভিন্ন শিল্প কলকারখানা থেকে নির্গত বর্জ্য পদার্থ,ধোঁয়া, ক্রমবর্ধমান মানুষের চাহিদা মেটাতে ব্যাপক হারে বৃক্ষ ছেদন,পারমানবিক অস্ত্র,মরণাস্ত্রের ব্যবহার সুন্দর পরিবেশ কে অনেক আগেই দূষিত করে চলেছে । মানুষ্য সৃষ্টি এই কারনেই বিরূপ প্রভাব পড়ছে জলবায়ুর উপরে। বিভিন্ন কারণে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন মনো অক্সাইডের মত ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমান বাড়ছে। গোটা বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে যার ফলে স্বরূপ আমরা 'গ্লোবাল ওয়ার্মিং' এর শিকার। বিজ্ঞানীদের মতে এই ভাবেই যদি কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান বাতাসে বৃদ্ধি পায় তবে ২০৫০ সালের পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ৩০℃ পর্যন্ত বেড়ে যাবে, এর ফলে আন্টার্কটিকার বরফ গলতে শুরু করবে,সমুদ্রের জলতল বৃদ্ধি পাবে, উপকূলবর্তী এলাকা গুলো জলের তলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। ভারতের সুন্দরবন তখন শুধু ইতিহাসের পাতাতেই থাকবে,বাস্তবে কোনো অস্তিত্বব থাকবে না। 
                      এটা তো শুধুমাত্র গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর প্রভাব,জলবায়ুর যে পরিবর্তন হচ্ছে তার প্রভাবে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে কলেরা,টাইফয়েড,আমাশয় প্রভৃতি রোগ গুলোর প্রভাব আরো বাড়বে। ঘন ঘন সুনামি,ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগও বাড়বে । বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন এই হারে যদি পরিবেশ দূষণ বাড়তে থাকে তবে মানবকুলের বেঁচে থাকা একসময় অনিশ্চয় হয়ে পড়বে। 
                    পরিবেশ দূষণ কে রোধ করতে হলে দরকার সবার মিলিত প্রচেষ্টা।মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, নির্মিত অত্যাধুনিক গাড়ি থেকে ক্ষতিকর গ্যাসের নির্গমন রোধ করা খুব দরকার। সর্বোপরি দরকার নির্বিচারে গাছ কাটা বন্ধ করা এবং বৃক্ষরোপণকে সামাজিক কার্যে পরিণত করতে হবে। এর পাশাপাশি প্রাকৃতিক গ্যাস,জলশক্তি,ভূতাপ শক্তি,সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে, এই শক্তি গুলো অফুরন্ত এবং প্রকৃতিতে দূষণও করে না।কৃষিজমিতে জৈব সারের ব্যবহারও বৃদ্ধি করা দরকার।
                   বিশ্বের সব দেশ পরিবেশ দূষণ নিয়ে চিন্তিত, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার্থে বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে বিভিন্ন সম্মেলন। ১৯৯৭ সালের কিয়োটো প্রটোকল, ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো তে পরিবেশ সম্মেলন, ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে পরিবেশ দূষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সমস্ত দেশ সচেতন ভাবে যদি এগিয়ে আসে এই সমস্যার সমাধানে তবে অচিরেই একটা দূষণমুক্ত পৃথিবী আবার গড়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। 

6. সম্প্রতি পথে ঘাটে যান-দুর্ঘটনায় পথচারীর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ ও যানবাহনের অগ্নিসংযোগের কথা শোনা যায়। এগুলি কতটা যানচালকের দায়িত্বহীনতা,কতটা পথচারীদের পথ চলার নিয়মকে উপেক্ষা করার ফলে,এই বিষয়ে নিরপেক্ষ পর্যালোচনা করে সংবাদপত্রের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো।         (PSC Clerk - 1999)


     পথ দুঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু দুই কিশোরের , দায় চালকের


নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়নগর, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ : গতবুধবার জয়নগরের থানার মোড়ে জামতলা গামী একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই কিশোরের। নির্মল এবং অজয় নামে ওই দুই পড়ুয়া এই দিন টিউশন সেরে বাড়ি ফেরার পথে এই দুঘটনা ঘটে, আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ওই অঞ্চল। পুলিশকে কে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, রাস্তা অবরোধ, বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, পুলিশের হাতাহাতি পর্যন্ত হয়ে যায় । গাড়ির আগুন নেভাতে আসা দমকলও রেহাই পায় নি জনতার আক্রোশ থেকে। 
                    জয়নগর থানার ওসি জানিয়েছেন এর আগেও এমন দুঘটনা অনেকবার হয়েছে, বিশেষ করে মোড়ে বাঁকের সময় বাস গুলো যথেষ্ট স্পিড নিয়ে চলাচল করে আর তার ফলেই রাস্তা পার হতে গিয়ে এমন দুঘটনা ঘটে। জয়নগর পৌরসভার এই এলাকাতেই গত বছরে ১৫ টি এমন দুঘটনা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালক পলাতক হয়েছে। 
                  দুর্ঘটনা গুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চালকেরাই দোষী। রাস্তায় ট্রাফিক আইন না মানা, ওভারটেক করা, অত্যাধিক ব্যবসার লোভ, দ্রুত গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিয়ে এসে আবার যাত্রী পরিবহন করার লোভেই এই ধরনের পথ দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে। এর সাথে বাস মালিকদের অমানবিক আচরণ, পর্যাপ্ত রেস্ট না দিয়ে বাস ড্রাইভার দের দূর পাল্লায় পাঠিয়ে দেওয়া আর বাস ড্রাইভার দের গাড়ি চালাতে চালাতে ফোনের ব্যবহার,অমনোযোগী ভাবও কম দায়ী নয়। 
                    এদিন বেশ কিছুক্ষণ ধরে অরাজকতা চলার পর এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পৌরসভার চেয়ারম্যান, মাননীয় MLA  এসে অবরোধকারীদের আর এমন ঘটনা ঘটবে না প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরই অবরোধ ওঠানো সম্ভব হয়। পৌরসভার চেয়ারম্যান জানিয়েছেন তারা এই ব্যাপারটা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত, এমন ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা যাতে আর না ঘটনা সেদিকে নজর দেবেন, যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার আছে তা তিনি নেবেন। বাঁকের মুখ গুলি তে স্পিড ব্রেকার,এমন সাইন বোর্ড বসানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি বলেন এলাকার মানুষ পথ দুর্ঘটনা নিয়ে একদমই সচেতন নয়, তাদের কে সচেতন করে তুলতে পৌরসভার পক্ষ থেকে প্রচার অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি জানান। 
                     যে দুজন কিশোর প্রাণ হারিয়েছে তাদের পরিবারের পাশেও থাকবেন বলে আশ্বাস দেন লোকাল MLA, তিনি জানান লোকাল থানাকেও তিনি বলেছেন রাস্তায় চেক পোস্ট দিতে এবং এমন ধরনের পরিস্থিতি যেন আর কখনো না আসে সে ব্যাপারে যথেষ্ট নজর দিতে। 
                     পথ দুর্ঘটনার দায় হয়তো চালকের উপরেই বেশি থাকে,তবে পথচারীদের উপরও একই দায় বর্তায়, রাস্তা পারাপারের সময় সিগন্যাল লক্ষ রাখা,যেখানে সিগন্যাল নেই সেখানে অতিরিক্ত সাবধানতার সাথে রাস্তা পারাপার করতে হবে, তবেই এমন ধরনের দুর্ঘটনা কমানো যেতে পারে। 

7. সাম্প্রতিককালে উগ্র সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির কারনে জাতীয় সংহতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে - এ সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংবাদপত্রে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।           (PSC Clerk - 1998)


 ভারতের জাতীয় সংহতি আজ সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারাগারে অবরুদ্ধ


নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১৬ ই আগস্ট, ২০১৯ : ধর্মনিরপেক্ষতা, অহিংসা ,সহিষ্ণুতা নিয়েই আমাদের দেশ ভারতবর্ষ তৈরি ,আমাদের ঐতিহ্যের সাথে এই শব্দগুলি আজন্মকাল থেকে জড়িয়ে আছে। কিন্তু এই শব্দ গুলির সাথেই সমান পাল্লায় বেড়ে চলেছে হিংসা, অসহিষ্ণুতা, অস্পৃশ্যতা। দেশের বিভিন্ন কোনায় ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা তা ধর্মীয় কারণে হোক কিংবা রাজনৈতিক কারনে, মানুষের মধ্যে এই ভেদাভেদই আজ আমাদের জাতীয় সংহতির ক্ষুণ্ন হওয়ার পথে দাঁড় করিয়েছে। অথচ এই সকল ঘটনা গুলোকে উপেক্ষাও করা যায় না, তারা এই দেশেরই অনবদ্য অংশ। বিভিন্ন রাজ্যে জাতপাতের কুৎসিত সংঘাত আজ ভারতীয় নাগরিকদের লজ্জার মুখে ঠেলে দিয়েছে। 
                দেশ যতই উন্নতি করুক, যতই প্রযুক্তিগত ভাবে বিশ্বের দরবারে নিজের নাম লেখাক, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করা এই শব্দ গুলোকে এখুনও অবধি কেউ গোড়া থেকে উপরে ফেলতে পারে নি। সমাজের বুকেই এই মন্দ শব্দ গুলো লালন পালন করে চলেছে একদল মুষ্টিমেয় স্বার্থলোভী মানুষ। যাদের প্রকৃত লক্ষ্য মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করে নিজের আখের গুছানো, নিজের ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা হলেই হল। অন্য কেউ সামাজিক অস্পৃশ্যতার, রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতার স্বীকার হলেও কার কি বা যায় আসে ! 
               হিন্দু বা মুসলিম উগ্রবাদী সংগঠন গুলোর ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা চলছেই, সমাজের ধর্মনিরপেক্ষ মহলের উদ্বেগ এটা কি চলতেই থাকবে না একসময় এগুলো বাড়তে বাড়তে মানুষের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়বে । বেশ কিছু বছর আগে তামিলনাড়ুর এক গ্রামে নিম্নবর্ণের কিছু যুবক উচ্চবর্ণের কিছু যুবকের সামনে পা তুলে বসায়, উচ্চবর্ণের মানুষরা অপমান বোধ করে আর তাই অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে তারা গ্রামে চড়াও হয়ে ওই যুবক গুলো কে খুন করে। সামান্য একটা ঘটনার দাম চোকাতে হলো নিজেদের জীবন দিয়ে। এমন অনেক ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। 
                  এখন প্রশ্ন হলো এমন ঘটনা আর কত বছর চলবে ? সেই ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসছে,ব্রিটিশরা এই ভেদাভেদ নীতিতেই এতদিন রাজত্ব করতে সক্ষম হয়েছে, তবুও মানুষের বোধের উন্মেষ হয় নি ! মানুষ আর কবে নিজের ভালোটা বুঝবে ! উগ্র সাম্প্রদায়িকতায় মানুষের ক্ষতি ছাড়া কোনো লাভ আজ পর্যন্ত হয় নি। 
                 সরকারের উচিত এ ব্যাপারে এখুনি কড়া পদক্ষেপ নেওয়া, রাজ্যে রাজ্যে বিভিন্ন টিম তৈরি করা যারা এই ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে বা মদত দিচ্ছে তাদের কে সনাক্ত করা । গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচার অভিযান চালানো ,মানুষকে বোঝানো এ ব্যাপারে খুব দরকার। স্কুলের পাঠক্রমে জাতীয় সংহতি,ঐক্যতা নিয়ে বিভিন্ন কার্যকলাপ যুক্ত করা উচিত যাতে শিশুদের মধ্যে শুরুতেই জাতীয় সংহতি রক্ষার বীজ বপন করে দেওয়া যায়। 


8. বর্তমান সমাজজীবনে জনসংযোগ মাধ্যমগুলির অপ্রতিহত প্রভাব যে সমস্যার সৃষ্টি করেছে - এ সম্পর্কে সংবাদপত্রের জন্য একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।           ( PSC Clerk - 2006)


     বর্তমান সমাজে জনসংযোগ মাধ্যমগুলির প্রভাব অপ্রতিহত 


নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১ লা এপ্রিল, ২০১৯ : গণমাধ্যম হলো বর্তমান সমাজের দপর্ন। গণমাধ্যম বলতে আমরা সেই মাধ্যমগুলোকে বুঝি যেগুলো আমাদের প্রযুক্তিগত ভাবে গণযোগাযোগ রাখতে সাহায্য করে থাকে। এই গণমাধ্যম কে তিন ভাগে ভাগ করতে পারি, প্রথমটি হলো মুদ্রণ মাধ্যম - যার মধ্যে বই,ম্যাগাজিন,সংবাদপত্র ইত্যাদি পড়ে। দ্বিতীয়ত, ইলেকট্রনিক মাধ্যম যেমন - টিভি,রেডিও, চলচ্চিত্র আর তৃতীয়ত, মডার্ন মিডিয়া বা আধুনিক মাধ্যম যেমন - ফেসবুক, ট্যুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি। 
                  প্রযুক্তির উন্নতিতে গোটা দুনিয়া এখন হাতের মুঠোয়। প্রতি মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজার হাজার তথ্য আপলোড হচ্ছে, তার মধ্যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল ,এটা বোঝার আগেই হাজির হচ্ছে আরো হাজার হাজার তথ্য। যে তথ্যের চাহিদা যত বেশি তার সহজলভ্যতা তত বেশি। তথ্য গুলিকে সাজিয়ে গুছিয়ে পরিবেশনের নামই হলো খবর। সঠিক সংবাদের থেকে ভুল সংবাদ সমাজের অনেক ক্ষতি সাধন করে। ভুল তথ্য মানুষের মধ্যে হিংসা, পারস্পরিক ঘৃণা এবং অবিশ্বাস এর সঞ্চার ঘটায়। 
                   আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে আত্মনিয়ন্ত্রিত হয়ে মানুষকে তার সমাজের আদর্শ, মূল্যবোধ  ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানানো গণমাধ্যমের দায়িত্ব। হিংসা,বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি মূলক সংবাদ থেকে গণমাধ্যম গুলোকে বিরত থাকা উচিত, সমাজের গঠনমূলক কাজে গণমাধ্যম গুলির ব্যবহার করাটাই শ্রেয়। 
                  গণমাধ্যম কে হয়ে উঠতে হবে জনকল্যাণমুখী। নিরপেক্ষ ভাবে সমাজের অন্যায়, অবিচার, সত্য গুলোকে উদঘাটন করাটাই প্রধান কাজ গণমাধ্যমের। কখনোই তাদের কাজের মধ্যে যেন ব্যক্তিস্বার্থ ফুটে না ওঠে। একটি দেশের অগ্রগতির পথে গণমাধ্যমের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই এই মাধ্যম গুলোকে অনেকবেশি দায়িত্বপরায়ন ও সৎ হওয়া উচিত।    
                   বেশ কিছু বছর আগে পাশ্চাত্য দেশ যেমন আমেরিকার দোষ ঢাকতে তাদের ইরাকের উপর অকারণে আক্রমন ঢাকতে এই তথ্য ছড়ানো হয় যে ইরাকের কাছে মারণঅস্ত্র রয়েছে যা পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর। আর এর ফলে আমেরিকার আক্রমনের পক্ষে জনমত গঠন হয় কিন্তু পরে জানা যায় তাদের এই প্রচারিত তথ্য সম্পুর্ন মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন।
                  গণমাধ্যম পারে সমাজের চোখে ভুল গুলো ধরিয়ে দিতে আবার এরাই পারে সমাজে হিংসা,বিদ্বেষ ছড়াতে। একটা ছোট্ট ভুল তথ্য মানুষে মানুষে দাঙ্গা কিংবা জনরোষের সৃষ্টি করতে পারে।  আবেগের তাড়নায়,মুনাফার লোভে কখনো এমন ভূমিকা পালন করা উচিত নয় যাতে সমাজের ক্ষতি সাধন হয়। বরং যে ভুল গুলো ধরিয়ে দিলে সমাজ তথা মানুষের উপকার হবে সেই দিকে জোর দেওয়া আর মানুষেরও উচিত সচেতন হওয়া, গণমাধ্যম এর কোন দিক গুলো গ্রহণ করব তা নিজের বিচার বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা। 

Post a Comment

Previous Post Next Post

Contact Form